৮ ঘণ্টা ধরে জেরা, তবু সন্তুষ্ট করতে পারেননি জ্যাকুলিন

জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ
জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ

সুকেশ চন্দ্রশেখরের ২০০ কোটি রুপির আর্থিক প্রতারণা মামলা ক্রমশ জটিল হচ্ছে। দুই বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ ও নোরা ফতেহি এ মামলার সঙ্গে শুরু থেকেই জড়িয়ে পড়েছেন। গতকাল বুধবার জ্যাকুলিনকে সমন পাঠিয়েছিল দিল্লির আর্থিক অপরাধ শাখা (ইওডব্লিউ)। প্রায় আট ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়েছিল জ্যাকুলিনকে। আজ বৃহস্পতিবার ইওডব্লিউর মুখোমুখি হচ্ছেন নোরা ফতেহি।
সাধারণ খাবার খেয়েছিলেন জ্যাকুলিন

গতকাল ইওডব্লিউর কর্মকর্তাদের ৫০টির বেশি প্রশ্নবাণের মুখোমুখি হতে হয়েছিল জ্যাকুলিনকে। তবু তাঁদের সন্তুষ্ট করতে পারেননি এই বলিউড অভিনেত্রী। জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে আবারও তাঁকে সমন পাঠাবে ইওডব্লিউ। এ তদন্তকারী সংস্থা জ্যাকুলিনকে বলেছে, সুকেশের কাছ থেকে পাওয়া উপহারের একটি তালিকা তৈরি করে পরবর্তী হাজিরার দিন সঙ্গে করে নিয়ে আসতে।

জানা গেছে, গতকাল জেরার মুখে জ্যাকুলিন দুবার ভেঙে পড়েছিলেন। মধ্যাহ্নভোজ সারতে ইওডব্লিউ অভিনেত্রীকে হোটেলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু জ্যাকুলিন যেতে চাননি। ইওডব্লিউর কর্মকর্তারা তাঁদের ক্যানটিন থেকে সাধারণ খাবার আনিয়েছিলেন জ্যাকুলিনের জন্য। এই বলিউড নায়িকা পুলিশ ক্যানটিনের খাবারই খেয়েছেন।

জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ
জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ

জ্যাকুলিনের কঠিন সময়
দিল্লি পুলিশের ইওডব্লিউ শাখা এর আগে জ্যাকুলিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুবার সমন পাঠিয়েছিল। কিন্তু তিনি পুলিশের সামনে হাজির হননি। তৃতীয়বার দিল্লি পুলিশ কড়াভাবে জ্যাকুলিনকে সমন পাঠিয়েছিল। এদিকে ভারতের আর্থিক দুর্নীতি-সংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) ২১৫ কোটি রুপি প্রতারণার মামলার জ্যাকুলিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। এই শ্রীলঙ্কান রূপসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সুকেশের থেকে সাত কোটি রুপির অলংকার উপহার নিয়েছেন। জ্যাকুলিন ও সুকেশের সাক্ষাৎ করিয়েছিলেন পিঙ্কি ইরানি। গতকাল পিঙ্কিকেও ইওডব্লিউর কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। প্রথমে জ্যাকুলিন ও পিঙ্কিকে আলাদাভাবে জেরা করা হয়। এরপর তাঁদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, জেরার সময় জ্যাকুলিন বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় সহজ থাকতে পারেননি। দু-একটা প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে গেছেন। জ্যাকুলিন জানিয়েছেন, তাঁর এক পরিচিত ২০১৩ সালে একটা খবরের পেপার কাটিং তাঁকে দেখিয়েছিল। তাতে সুকেশের কীর্তিকলাপের কথা লেখা ছিল।

জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ
জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ

এটা দেখার পর সুকেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দিয়ে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন বলে জানান জ্যাকুলিন। জ্যাকুলিন পুলিশ কর্মকর্তাদের এ–ও জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর পিঙ্কি ইরানি তাঁর কাছে এসেছিলেন। পিঙ্কি তাঁর সন্তানের দিব্যি দিয়ে বলেছিলেন, সুকেশ ভালো মানুষ। সুকেশকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত সব খবর মিথ্যা বলে পিঙ্কি জানিয়েছিলেন জ্যাকুলিনকে। জ্যাকুলিন বলেন, এর সত্যতা বিচার করতে হলে সুকেশকে তাঁর সামনে এনে জিজ্ঞাসা করা হোক।
জ্যাকুলিন ও পিঙ্কির বচসা

গতকালের এ ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের সময় জ্যাকুলিন ও পিঙ্কির মধ্যে বচসা হয় বলে জানা গেছে। জ্যাকুলিন অভিযোগ করেছেন, পিঙ্কি শুরু থেকেই জানতেন যে সুকেশ একজন প্রতারক; কিন্তু বিষয়টা লুকিয়েছেন। এই পিঙ্কির মাধ্যমেই জ্যাকুলিনকে কোটি কোটি রুপির উপহার পাঠাতেন সুকেশ। পিঙ্কি ইরানি সুকেশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এই প্রতারকের কীর্তিকলাপের সঙ্গে পিঙ্কিও জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ইওডব্লিউর কর্মকর্তারা জ্যাকুলিনকে জিজ্ঞাসা করেন—সুকেশের পাঠানো উপহার যে প্রতারণার অর্থে কেনা, এই বিষয়টা তিনি জানতেন কি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *