৩৪০ বছরের পুরোনো রাজকীয় যুদ্ধজাহাজের সন্ধান

‘দ্য গ্লুসেস্টার’-জাহাজের এই চিত্রকর্ম এঁকেছেন শিল্পী জোহান ডাংকার্টস।
‘দ্য গ্লুসেস্টার’-জাহাজের এই চিত্রকর্ম এঁকেছেন শিল্পী জোহান ডাংকার্টস। 

ভবিষ্যৎ রাজাকে বহনকারী একটি রাজকীয় যুদ্ধজাহাজ ৩৪০ বছর আগে ইংল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে ডুবে গিয়েছিল। গত শুক্রবার গবেষকেরা সেই জাহাজের তথ্য উন্মোচন করেছেন। ধ্বংসের হাত থেকে জাহাজটিকে বাঁচাতে এর তথ্য ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে গোপন রাখা হয়েছিল। ওই জাহাজের নাম ‘দ্য গ্লুসেস্টার’।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ১৬৮২ সালে ডিউক অব ইয়র্ক জেমসকে নিয়ে যাত্রা করেছিল দ্য গ্লুসেস্টার জাহাজটি। ইংল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে বালুর ঢিবিতে সেটি ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। এতে দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে যান ডিউক অব ইয়র্ক। পরে তিনি ইংল্যান্ডের রাজা হন। তাঁর পরিচয় হয় কিং জেমস টু নামে। তিন বছর পর তিনি কিং জেমস সেভেন নামে স্কটল্যান্ডেরও রাজা হন।

ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়ার আর্লি মডার্ন কালচারাল হিস্টোরির অধ্যাপক ক্লেয়ার জোভিট বলেন, আবিষ্কারটি ১৭ শতকের সামাজিক, সামুদ্রিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারণাকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বিবেচনায় পানির নিচের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অসামান্য উদাহরণ।

ইংল্যান্ডের পূর্ব উপকূলের গ্রেট ইয়ারমাউথ থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে এই জাহাজ পাওয়া গেছে। চার বছর ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে জুলিয়ান ও লিংকন বার্নওয়েল নামের দুই ভাই ২০০৭ সালে এই জাহাজ আবিষ্কার করেন। এর পর থেকে এ জাহাজের তথ্য আড়ালেই রেখেছিলেন তাঁরা।

ডাইভিং বিষয়ে কাজ করা লিংকন বার্নওয়েল বলেন, ‘সমুদ্রতটে নামার সময় আমি প্রথম যে জিনিসটি দেখেছিলাম, তা হলো সাদা বালুর ওপর বড় কামান পড়ে রয়েছে। এ আবিষ্কার ছিল দারুণ অনুপ্রেরণাদায়ক ও সত্যিই সুন্দর।’

জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে লেগে পরিবারের ক্রেস্টসহ সিলযুক্ত একটি কাচের বোতল। লেগে হচ্ছে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের পূর্বপুরুষ।

অধ্যাপক ক্লেয়ার জোভিট বলেন, দ্য গ্লুসেস্টার জাহাজটি দ্রুত ডুবে গিয়েছিল বলে কেউ কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। এটা দুর্দান্ত এক টাইম ক্যাপসুল। জাহাজ থেকে উদ্ধার হওয়া অন্যান্য প্রত্নবস্তুর মধ্যে রয়েছে নেভিগেশন সরঞ্জাম, ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, জামাকাপড় ও মদের বোতল। কিছু কিছু জিনিস এখনো অক্ষত রয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়ার গবেষকদের ধারণা, ওই জাহাজ দুর্ঘটনায় ১৩০ থেকে ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই জাহাজ দুর্ঘটনায় ইতিহাস বদলে যাওয়ার হুমকি সৃষ্টি হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *