৪০ তম বিসিএস: বুয়েটের দুই প্রথমের গল্প

সাকিব হোসেন
সাকিব হোসেন

৪০তম বিসিএসে আবগারি ও শুল্ক ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন সাকিব হোসেন। বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল (ইইই) বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। তাঁর পরের ব্যাচের মোহাইমিনুল ইসলাম হয়েছেন পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম।

সাকিব বলেন, ‘বাবা সরকারি চাকরি করতেন। সেই সুবাদে ছোটবেলা থেকে আশপাশে ক্যাডার কর্মকর্তা দেখতাম। তখন থেকেই মনে ক্যাডার হওয়ার একটা সুপ্ত ইচ্ছা ছিল। বুয়েট থেকে বিএসসি পাস করার পর সেই ইচ্ছা আরও জোরালো হয়।’

বিজ্ঞাপন

https://10ms.io/8wmD9U

স্নাতক শেষে সাকিব দেখেছেন, বন্ধুদের অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। তাই একটু দ্বিধায় ছিলেন। বিদেশে যাবেন, নাকি দেশেই চাকরি করবেন! শেষ পর্যন্ত বিসিএসের চেষ্টা করবেন বলেই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সাকিব সবচেয়ে বেশি প্রেরণা পেয়েছেন মা-বাবার কাছ থেকে। বুয়েট ক্যাম্পাসের বড় ভাই যাঁরা বিভিন্ন ক্যাডারে কর্মরত, তাঁরাও অনুপ্রাণিত করেছেন। সাকিব বলেন, ‘আগে একটা ট্রেন্ড ছিল, অনেকে বিদেশ গিয়ে স্থায়ী হতে চাইতেন। কিন্তু বিসিএসের মাধ্যমে ভালো চাকরি ও সম্মান পাওয়া যায় বলে এখন ট্রেন্ড বদলেছে।’

বিজ্ঞাপন

https://10ms.io/8wmD9U

সাকিবের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে। তবে বাবার চাকরির সুবাদে পড়াশোনা করেছেন যশোরে। ২০০৯ সালে যশোরের পুলিশ লাইনস মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। আর ২০১১ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে পেরোন উচ্চমাধ্যমিক।

মোহাইমিনুল ইসলাম
মোহাইমিনুল ইসলাম

পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম মোহাইমিনুল ইসলাম ২০১২-১৩ সেশনে বুয়েটে ভর্তি হয়ে বেছে নিয়েছিলেন পানিসম্পদ প্রকৌশল বিভাগ। মোহাইমিনুল ঠিক করেছিলেন, দেশেই থাকবেন। শুরু থেকেই তাঁর পরিকল্পনা ছিল, পাস করে একটা চাকরিতে ঢুকে পড়বেন, পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নেবেন। সেভাবেই নিজেকে তৈরি করেছেন তিনি।

স্নাতক শেষে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন মোহাইমিনুল। পুরোদমে বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করার আগে বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন নিয়ে কয়েক দিন ঘাঁটাঘাঁটি করেছেন। এভাবে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে তাঁর একটা ধারণা হয়েছে। এরপর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তিনি।

শুরু থেকেই পররাষ্ট্র ক্যাডার তাঁর কাছে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। বিসিএসের প্রথম দুই স্তরে পাস করে তাঁর মনে হলো, ভাইভার প্রস্তুতি ভালোভাবে না নিলে পছন্দের ক্যাডার ফসকে যেতে পারে। তাই ভাইভার জন্যও সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছেন। তারপর? মুহাইমিনুল বলছিলেন, ‘ভাইভাটা ভালো হয়েছিল। যেমনটা চেয়েছি, সেভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পেরেছি। মনে হচ্ছিল, পছন্দের ক্যাডার হয়তো পেয়ে যাব। ফলাফলের দিনে বুক ধকধক করছিল। আমি ছিলাম ঢাকার বাইরে। যখন ফলাফল দেখলাম, বিশ্বাস হচ্ছিল না। আবারও দেখলাম, ঠিক দেখছি কি না। স্বপ্ন সত্যি হওয়ার আনন্দ আসলেই ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’

শেরে বাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পেরিয়ে বুয়েটে ভর্তি হন এই তরুণ। বাবা মোসলেম উদ্দিন আহমেদ জনতা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আর মা আলপনা বেগম গৃহিণী। গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে হলেও বেড়ে উঠেছেন ঢাকায়। স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপ তো পেরোনো হলো, এখন সামনের দিনগুলোর রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার অপেক্ষায় আছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *