৩ গুণ বেশি মৃত্যু চট্টগ্রামে উপসর্গে
পবিত্র ঈদুল আজহার আগের দিন। সবাই ব্যস্ত। রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয় নুর নাহার বেগমের (৫৫)। এত দ্রুতই অবস্থার অবনতি হয় যে বাসা থেকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয়। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শোনার আধা ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান নুর নাহারের স্বামী জেবল হোসেন (৬০)। তিনিও আগে থেকে জ্বর-কাশিতে ভুগছিলেন। ঈদের দিন (২১ জুলাই) সকালে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ায় দুজনের দাফন-কাফনের কাজ করেন গাউছিয়া কমিটির স্বেচ্ছাসেবকেরা।
নাহার-জেবল দম্পতির মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩ আগস্ট আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর জালালাবাদ কুলগাঁওয়ের নিজ বাসায় মারা যান আরেক দম্পতি। ওই দিন বেলা আড়াইটায় মারা যান স্বামী কাজী মোহাম্মদ শফি (৭৫), তিন ঘণ্টার পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মারা যান স্ত্রী মমতাজ বেগম (৭০)। তাঁদের লাশ দাফনেও অংশ নেয় গাউছিয়া কমিটি।
সরকারি হিসাবে, চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় গত জুলাই মাসে করোনায় মৃত্যু হয় ২৬১ জনের। আর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আল মানাহিল, গাউছিয়া কমিটি, নিষ্ঠা ফাউন্ডেশন ও কোয়ান্টাম ওই মাসে লাশ দাফন ও সৎকার করে ৯৭১ জনের। এ ছাড়া ১ থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ১০ দিনে দাফন ও সৎকার করা হয় ৩৯৩ জনের লাশ। আর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, একই সময়ে মারা যান ১২০ জন।
জুলাইয়ে ৬৪০টি লাশ দাফন করে গাউছিয়া কমিটি। এর বেশির ভাগই করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া।
আল মানাহিল জুলাইয়ে ২৪১টি লাশ দাফন করে। সংগঠনের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতাল, বাসাবাড়ি থেকে তাঁদের কাছে মৃত্যুর খবর এলে দাফন, কাফন ও সৎকার করছেন। লাশের মধ্যে করোনা ছাড়াও উপসর্গ থাকা রোগীও রয়েছেন। এক দিনে সর্বোচ্চ ১৮টি লাশও দাফন করেছেন তাঁরা।