স্ক্রিন শেয়ারিংয়ের সেরা ১০ অ্যাপ

স্ক্রিন শেয়ারিংয়ের সেরা ১০ অ্যাপ

স্ক্রিন শেয়ারিংয়ের সেরা ১০ অ্যাপ। ছবি: এডিডেস্ক

ভার্চুয়াল জগতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া কিংবা জরুরি প্রয়োজনে অফিসের কর্মীদের সংযুক্ত করার কাজে ব্যবহৃত হয় স্ক্রিন শেয়ারিং অ্যাপ। দূরবর্তী অবস্থানে থেকে কম্পিউটারের ফাইল অ্যাক্সেসের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন পড়ে এই ব্যবস্থাটির।

এসব কাজে দক্ষ এমন ১০টি স্ক্রিন শেয়ারিং অ্যাপ রাখা যেতে পারে ব্যবহারের তালিকায়।   

জুম 

করোনা মহামারির পুরো সময়জুড়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলাপচারিতায়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ট্র্যাক পরিচালনায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের প্রয়োজনীয়তায় জুমকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। স্ক্রিন শেয়ারিং এবং দূরবর্তী অ্যাক্সেসের জন্যও ব্যবহার করা হয়েছে এটি। জুমের উইন্ডোজ ডেস্কটপ অ্যাপ ব্যবহার করে অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের সাহায্য করা বা অপরের স্ক্রিনে গিয়ে কাজ করা যায়। 

জুমে অন্য কারও স্ক্রিন নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনাকে প্রথমে View Options থেকে রিকোয়েস্ট রিমোট কন্ট্রোলে (Request Remote Control) গিয়ে রিকোয়েস্ট (Request) পাঠাতে হবে। এরপর অন্যপ্রান্ত থেকে সেটা গ্রহণ করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। 
 
বিনামূল্যে ডাউনলোড পরিষেবায় জুমে সর্বাধিক ১০০ জনকে মিটিংয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। 

টিমভিউয়ার 

সহজলভ্য থার্ড-পার্টি টুলগুলোর মধ্যে টিমভিউয়ার সবচেয়ে পরিচিত। ১০ বছর পুরোনো এই অ্যাপ ব্যবহার করেন অনেকেই। স্ক্রিন-শেয়ারিং এবং দূরবর্তী অ্যাক্সেস ছাড়াও এই সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর সঙ্গে সংযুক্ত কম্পিউটারের মধ্যে ফাইল স্থানান্তর, ওয়েব কনফারেন্স এবং অনলাইন উপস্থাপনার সুযোগ পাওয়া যায়।

কম্পিউটারে নিয়মিত একই গ্রুপের সঙ্গে সংযোগ থাকলে এক-ক্লিক অ্যাক্সেসের অনুমতি সাপেক্ষে অ্যাকাউন্টে গ্রুপ তৈরি করা যাবে। আর অন্য কারও সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে একটি পিন কোডের প্রয়োজন হবে।

এ ছাড়া সফটওয়্যারটি গ্রুপ সেশনের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে একমুখী সেশনের বিপরীতে ব্যবহারকারীদের নিয়ন্ত্রণ দেওয়া যাবে। উইন্ডোজে কাজ করার পাশাপাশি অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোনের জন্য সেরা স্ক্রিন-শেয়ারিং অ্যাপ হিসেবেও বিবেচিত। 

অ্যারোঅ্যাডমিন 

অ্যাপের কার্যক্রম এবং অন-স্ক্রিন ভিজ্যুয়াল দেখে বোঝাই যায়, অ্যারোঅ্যাডমিন অনেকটা টিমভিউয়ারের মতো। 

তবে অ্যারোঅ্যাডমিনে ইনস্টলেশনের দরকার হয় না। এতে কেবল ২ এমবি ইএক্সই ফাইল পরিচালনা করে অন-স্ক্রিন নির্দেশাবলি অনুসরণ করতে হয়। ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভে অনুলিপি রেখে যেকোনো কম্পিউটারে দূরবর্তী অ্যাক্সেসও দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া কম্পিউটারের আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি পাসকোড শেয়ার করে সংযুক্ত হওয়া যায়। 

ব্যবহারকারী লগ-ইন করার আগে অ্যাপ পরিচালনার জন্য কনফিগার করা যাবে।  

লাইট ম্যানেজার

অন্যান্য ব্যয়বহুল টুল যেসব বৈশিষ্ট্যের জন্য ব্যবহার করা হয়, স্বল্প পরিচিত লাইট ম্যানেজার প্রোগ্রাম সেসব সুবিধা দিয়ে থাকে। ফাইল স্থানান্তর এবং টেক্সট চ্যাটের মতো মৌলিক বিষয় ছাড়াও এতে পাওয়া যায়-
 

  • আরডিপি ইন্টিগ্রেশন
  • স্ক্রিন রেকর্ডার
  • স্ক্রিন-শেয়ারিং সফ্টওয়্যারের দূরবর্তী ইনস্টলেশন
  • নেটওয়ার্ক ম্যাপিং
  • আইপি ফিল্টারিং
  • রেজিস্ট্রি এডিটর
  • ক্যাসকেড সংযোগ
  • ৩০টি কম্পিউটার সংযোগ 

এনিডেস্ক

এনিডেস্ক পোর্টেবল প্রোগ্রাম বা ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে চালানো যেতে পারে। এটির মাধ্যমে দুটি অ্যাপ সংযোগ করা বেশ সহজ। এজন্য ক্লায়েন্টের শুধু হোস্টের অ্যানিডেস্ক অ্যাড্রেস প্রয়োজন হবে।
 
অ্যাপটির অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে, সামঞ্জস্যকারী স্লাইডার, যা সংযোগের গতি, ক্লিপবোর্ড সিংকিং, দূরবর্তী সেশন রেকর্ডিং এবং ক্রস-কম্পিউটার কী-বোর্ড শর্টকাটগুলোর সঙ্গে সংযোগে কোয়ালিটির ভারসাম্য বজায় রাখে।
 
মিকোগো

মিকোগো ব্যবহারকারীর ডেস্কটপ শেয়ার এবং দূরবর্তী স্থান থেকে অন্য ব্যবহারকারীর কম্পিউটার অ্যাক্সেসের সুবিধা রয়েছে। এটিতে রয়েছে লাইভ চ্যাট উইন্ডো এবং অ্যাপটি ফাইল ট্রান্সফার সাপোর্ট করে। 

এ ছাড়া এটি নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপের কনটেন্ট শেয়ারে পারমিশন না দেওয়ায় সব অংশগ্রহণকারীদের কাছে সংবেদনশীল তথ্য প্রদর্শন করা থেকে বিরত থাকা যায়। 

শো-মাইপিসি
 
স্ক্রিন শেয়ারিং অ্যাপ শো-মাইপিসির ইউজার ইন্টারফেস উইন্ডোজ, ম্যাক এবং লিনাক্সের জন্য বেশ উপযুক্ত। এটি ব্যবহারের জন্য অ্যাকাউন্ট লাগে না এবং ইনস্টল না করলেও চলে।  

মিঙ্গলভিউ

উইন্ডোজ-ভিত্তিক ফ্রি স্ক্রিন-শেয়ারিং সফটওয়্যার হলো মিঙ্গলভিউ। ফ্রি ডেস্কটপ শেয়ারিং অ্যাপ হিসেবে এতে অসীম সংখ্যক অংশগ্রহণকারী যুক্ত হতে পারেন এবং মিটিং আয়োজনও করা যায়।

তবে ডেস্কটপ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে না চাইলে ওয়েব অ্যাপের মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির স্ক্রিন দেখা যাবে কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। 

স্কাইফেক্স

স্কাইফেক্স একটি অনলাইন রিমোট অ্যাক্সেস পরিষেবা। এটি সম্পূর্ণ ব্রাউজার-ভিত্তিক এবং সব প্ল্যাটফর্মে অ্যাক্সেসযোগ্য। সহজ টুল ব্যবহারকারীদের জন্য এটি চমৎকার অপশন হতে পারে। 

অ্যাপটি ২৫৬-বিট এসএসএল এনক্রিপশন এবং মালিকানা সুরক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে যোগাযোগ সুরক্ষিত করে এবং এটি ফায়ারওয়াল, প্রক্সি এবং ন্যাট-এর মাধ্যমে কাজ করবে।

৩০ মিনিটের জন্য বিনামূল্যে এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যাবে। 

রিমোট ইউটিলিটিস 

রিমোট ইউটিলিটিস উইন্ডোজের জন্য আরেকটি রিমোট ডেস্কটপ শেয়ারিং অ্যাপ। এটির মৌলিক লাইসেন্সের জন্য এককালীন ২৯ মার্কিন ডলার খরচ করতে হয়৷

অ্যাপটির সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাও রয়েছে। যেমন, এটি ফায়ারওয়াল এবং ন্যাট ডিভাইসগুলোকে বাইপাস করতে পারে এবং একই সময়ে অনেক কম্পিউটারের সঙ্গে সংযোগ সাপোর্ট করে। কিন্তু নেতিবাচক দিক হলো, এটি শুধু উইন্ডোজ কম্পিউটারে সাপোর্ট করে। পরিষেবার জন্য মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন থাকলেও ব্যবহারকারী সেখানে দর্শক হিসেবে কাজ করতে পারে। 

তথ্যসূত্র: মেইক ইউজ অব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *