লঞ্চের ধাক্কায় পা হারানো কবিরকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়
ঈদুল ফিতরের সময় সদরঘাটে লঞ্চের ধাক্কায় পা হারোনো কবির হোসেনকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।
‘এই সংসার চলবে কী করে: লঞ্চের ধাক্কায় পা হারানো কবিরের স্ত্রী’ শিরোনামে গত ১৮ মে প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ঈদুল ফিতরের সময় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তা–সুরক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিতে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে ৯ জুন রিটটি করা হয়। রিটে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
পরে আইনজীবী তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঈদুল ফিতরের সময় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তা–সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতে বিবাদীদের খামখেয়ালি, নিষ্ক্রিয়তা ও অবহেলা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। নৌপরিবহন সচিব, বিআইডব্লিটিএর চেয়ারম্যান ও পূবালী-১২ লঞ্চের মালিকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর নবাবপুরে বৈদ্যুতিক পাখার দোকানে দিনমজুরের কাজ করতেন কবির হোসেন (২৮)। ঈদ উদ্যাপন করতে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে পটুয়াখালীতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সদরঘাটে লঞ্চের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন এই যুবক। কেটে ফেলতে হয় তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ। পুরো পরিবারের জন্য ঈদ উদ্যাপন পরিণত হলো চরম বিষাদে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে চিকিৎসাধীন কবিরের একমাত্র চিন্তা, কীভাবে চলবে সংসার, একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যৎ দেখবে কে?
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদুল ফিতরের এক দিন আগে গত ১ মে সকালে স্ত্রী, মেয়ে ও তিন বোনকে নিয়ে সদরঘাটে আসেন কবির। ঘাটে পটুয়াখালীর একটি লঞ্চ থাকলেও সেটি কানায় কানায় ভরা ছিল। তাই স্বজনদের নিয়ে লঞ্চে উঠতে পারেননি তিনি। অপেক্ষার পর পূবালী-১২ লঞ্চটি ঘাটে ভিড়তে শুরু করে। বেশি গতি থাকায় লঞ্চটি পন্টুনে এসে জোরে ধাক্কা দেয়। অন্যদিকে যাত্রীর প্রচণ্ড চাপ ছিল পন্টুনে। এ সময় লঞ্চ ও পন্টুনের মাঝে চাপ খেয়ে কবিরের বাঁ পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় আলাদা হয়ে যায়। আর শাহজালাল নামে আরেক ব্যক্তির ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে ভেঙে যায়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।