রোবট ব্যবহারে কৌশলী হতে হবে

শিল্পকারাখানায় রোবট দিয়ে কাজ করানোর প্রবণতা বাড়ছে

শিল্পকারাখানায় রোবট দিয়ে কাজ করানোর প্রবণতা বাড়ছেছবি : রয়টার্স

প্রযুক্তিকীকরণ আমাদের করতেই হবে, কিন্তু তা করতে হবে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে, যাতে প্রকৃতি আর প্রযুক্তির মধ্যে ভারসাম্য থাকে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মানুষের সঙ্গে রোবটের সম্পর্ক আরও বাড়বে। তবে সব রোবটকে যে হাঁটতে-চলতে-কথা বলতে পারা যন্ত্রমানব হতে হবে, তা কিন্তু নয়। কলকারখানায় যে যন্ত্রগুলো এখন মানুষ ব্যবহার করে, সেগুলো আগামী দিনে চালাবে রোবট। অর্থাৎ কলকারখানায় কর্মীদের বদলে রোবট কাজ করবে।

রোবট কর্মীদের বেতন–বিশ্রামের দরকার হয় না, খাবারের বিরতি বা ছুটি দেওয়ারও ঝামেলা নেই। নির্ভুলভাবে একটানা কাজ করার ক্ষমতা থাকায় রোবট দিয়ে কাজ করালে উৎপাদন ও লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে নিঃসন্দেহে। ফলে মালিকপক্ষও মানুষের বদলে রোবট কর্মী বেশি পছন্দ করবে।

রোবটকে যে যন্ত্রই হতে হবে, তা কিন্তু নয়। সফটওয়্যার রোবটও মানুষের করা কাজ দ্রুত করতে পারে। একে বলে রোবটিকস প্রোসেস অটোমেশন (আরপিএ)। এই ধরনের সফটওয়্যার দিয়ে কয়েক দিনের কাজ মাত্র কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টায় করা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক সিদ্ধান্তও দ্রুত নেওয়া সম্ভব।

বোঝাই যাচ্ছে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব শ্রমজীবী মানুষের জীবিকার জন্য বড় ধরনের হুমকি হতে পারে। কারণ, কায়িক শ্রমের পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক কাজও খুব সহজেই রোবট দিয়ে করা সম্ভব। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, আগামী দিনে বেশ কিছু নতুন কাজ বা পেশা তৈরি হবে, যা এখনো আমাদের ধারণার বাইরেই রয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, বর্তমানে স্কুলে সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ৬০ শতাংশই আগামী দিনে সম্পূর্ণ নতুন কোনো পেশায় যোগ দেবে, যেসব পেশার এখন পর্যন্ত কোনো অস্তিত্বই নেই। অর্থাৎ পুরোনো পেশাগুলো হারিয়ে নতুন নতুন পেশা তৈরি হবে, ফলে চাকরির সংখ্যা বাড়বে। তবে এ জন্য অবশ্যই কর্মীদের নতুন ঘরানার প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *