মোবাইলে প্রসেসর কি ? কোন মোবাইল প্রসেসর ভালো (Processor details)

মোবাইল প্রসেসর কি ? (What Is a Processor in Mobile) আজকাল আমরা বন্ধুদের মুখে বা নিজেদের প্রতিবেশীদের মুখে অনেকবার শুনি যে,তাদের মোবাইলে 2 GHz প্রসেসর আছে বা তাদের মোবাইল ফোনে dual coreocta core বা quad core প্রসেসর আছে এবং তাই তাদের মোবাইল অনেক ফাস্ট এবং ভালো। কি ? এমন অনেকেই বলে তাইতো ?

What is mobile processor ?

তখন আপ্নেও হয়তো ভাবেন যে, মোবাইলে এই প্রসেসর টি কি বা প্রসেসর কাকে বলেপ্রসেসরের কাজ কি, বা কেন একটি ভালো প্রসেসর হলে আপনার ফোন ফাস্ট কাম করবে এবং ব্যাটারী কম ব্যবহার করবে।

এগুলো প্রশ্ন আপনার মনে আসাটা স্বাভাবিক এবং নিচে আমরা এই প্রশ্ন গুলির জবাব জানবো।

মনে রাখবেন,যদি আপনি একটি নতুম মোবাইল কিনতে যাচ্ছেন তাহলে, প্রথমে মোবাইলের প্রসেসরের ব্যাপারে অবশই জেনেনিবেন।

কারণ আমি আগেই যা বললাম, মোবাইল ফাস্ট কাজ করা, হ্যাং (hang) না হওয়া, মোবাইল গরম হয়ে যাবা এবং ব্যাটারী চার্জ বেশিক্ষন চলা এগুলো মোবাইলের প্রসেসরের ওপরে অনেকটাই নির্ভর করে।

আর, মোবাইল কেনার সময় যদি আপনি প্রসেসরের ওপরে ধ্যান না দেন, তাহলে হয়তো আপনার কেনা নতুন smartphone আপনাকে অসন্তুষ্ট করতে পারে এবং আপনি স্লো মোবাইল, মোবাইল গরম হবা, চার্জ বেশি খাওয়া আর এরকম অনেক ধরণের সমস্যাতে পড়তে পারেন।

কারণ, সবটাই মোবাইলের processor এর ওপরে নির্ভর।

মোবাইল প্রসেসর কি ? (Mobile processor details in Bangla)

যেমন কম্পিউটার বা ল্যাপটপে CPU কাজ করার জন্য একটি প্রসেসর থাকে, ঠিক তেমনই মোবাইল ডিভাইস কাজ করার জন্য একটি প্রসেসরের প্রয়োজন।

প্রসেসর আপনার মোবাইলের বোর্ডে লেগে থাকা একটি ছোট্ট চিপ (chip) যে মোবাইলে সব ধরণের ছোট বড়ো কাজ করার জন্য গুর্রুতপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সোজাভাবে বললে এইটা আপনার মোবাইলের brain এর মতো যে সব ধরনেক ছোট বরো কাজ যেমন video চলানো, গেম খেলা, ইন্টারনেট ব্যবহার করা, গান শোনা আদি করতে মোবাইলকে সাহায্য করে।

এবং, একটি প্রসেসর ছাড়া আপনার মোবাইলে এগুলি কাজ কখনো সম্ভব হবেনা।

আর তাই, যখন আপনার মোবাইলের processor ভালো হবেনা তখন আপনার মোবাইলে সব ধরণের কাজ করতে অনেক অসুবিধা হবে।

মোবাইল স্লো হবে, হ্যাং হবে, মোবাইল গরম হবে এবং অনেক জল্দি ব্যাটারী চার্জ শেষ হয়েযাবে।

কারণ, যা আমি আগেই বললাম এই কাজ গুলি প্রসেসরের দ্বারা মোবাইলে সম্পন্ন হয়।

তাই, প্রসেসর ভালো না হলে কাজগুলি মোবাইল ভালোভাবে করতে পারবেনা এবং আপনার অসুবিধা সম্মুখীন হতে হবে।

যতটা ভালো এবং ফাস্ট প্রসেসর আপনার মোবাইলে থাকবে ততটাই smooth এবং fast ভাবে আপনি নিজের মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন বা তাতে ভালো ভালো গেম খেলতে পারবেন।

যদি আপনার মোবাইল গরম হচ্ছে, hang বা lag হচ্ছে, স্লো কাজ করছে কিংবা অনেক ব্যাটারী ব্যবহার করছে,তাহলে বুঝাযাবেন যে আপনার মোবাইল ফোনে ভালো প্রসেসর লাগানো নেই।

কারণ, এগুলো সমস্যা বিশেষকরে একটি কমজোর এবং কম ক্ষমতার প্রসেসরের সংকেত।

Also read – Android মোবাইলের জন্য ৫ টি এন্টিভাইরাস app 

মোবাইলের প্রসেসর কত রকমের ?

হয়তো আপনারা জানেননা যে,স্মার্টফোনে (smartphone) প্রসেসর অনেক রকমের থাকতে পারে।

এদের মধ্যে কিছু অনেক ফাস্ট কিছু মোটামোটি ভালো এবং কিছু একদম স্লো।

কোরের (Core) এর সংখ্যার পার্থক্য

মোবাইলে প্রসেসর বিশেষকরে ৪ রকমের হয়।

  • ডুয়াল কোর (dual core).
  • কোয়াড কোর (quad core).
  • হেক্সা কোর (hexa core). এবং 
  • অক্টা কোর (octa core).

এই ৪ রকমের প্রসেসরে একটি সাধারণ পার্থক্য আছে। সেটা হলো, সবটিতেই কোরের (core) সংখ্যা আলাদা আলাদা।

ডুয়াল কোরে দুইটা কোর থাকে, কোয়াড কোরে ৪ টা, হেক্সা কোরে ৬ তা আর অক্টা কোর প্রসেসরে ৮ টা কোর থাকে।

এবং মনে রাখবেন, আপনার প্রসেসরে কোরের সংখ্যা যতটাই বেশি হবে তার কাজ করার শক্তি অনেক বেশি হবে।

মোবাইল ফাস্ট কাজ করবে এবং আপনার ফোন গরম হওয়া, হ্যাং হওয়া, ব্যাটারী বেশি খাওয়া এগুলি অসুবিধা আপনি পাবেননা।

কারণ, প্রসেসরে একটা কোর একটা হাথের মতো।

তাই, প্রসেসরে যতটাই কোর (core) থাকবে সে ততটাই হাথের শক্তি দিয়ে কাজ করতে পারবে এবং তাতে তার performance (কার্যক্ষমতা) অনেক অনেক ভালো হবে।

তাহলে, যদি আপনি নতুন মোবাইল কিনতে যাচ্ছেন তাহলে অবশই মোবাইলে কত কোরের প্রসেসর লাগানো আছে তা অবশই ধ্যান দিবেন।

অক্টা কোর বা কোয়াড কোর থাকাটা আপনার মোবাইলের জন্য অনেকটাই ভালো।

Note – মোবাইল ফোনে কোন প্রসেসর লাগানো আছে, সেটা আপনি মোবাইলের বাক্সর পেছনে “specification” অংশতে দেখতে পারবেন।

তা নাহলে, যে মোবাইল আপনি কিনতে চান তার মডেল নম্বর দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করুন আপনি সেই মোবাইলের বিষয়ে সবটাই জানতে পারবেন।

কোম্পানির (Company) পার্থক্য

Core বা কোরের বাইরেও মোবাইল প্রসেসর আলাদা আলাদা কোম্পানির ওপরেও ভাগ করা যেতে পারে।

মানে, ৪ টি মূল কোম্পানি আছে যারা মোবাইলের processor manufacture করেন।

  • Qualcomm / snapdragon 
  • MediaTek 
  • Samsung / Exynos 
  • Nvidia 

আলাদা আলাদা মোবাইল কোম্পানি ওপরে দেয়া এই ৪ টি কোম্পানির বানানো প্রসেসর ব্যবহার করেন।

GHz (frequency) এর পার্থক্য

এর বাইরেও, processor এ GHz এর ওপরেও পার্থক্য থাকে। কিছু, ১ GHz, ১.৫ GHz বা কিছু ২ GHz এর বা তার থেকে বেশিও থাকে।

তাই মনে রাখবেন, যত বেশি GHz এর সংখ্যা হবে ততটাই আপনার mobile processor ফাস্ট (fast) হবে এবং তার কার্যক্ষমতা অনেক হবে। একে আমরা frequency ও বলতে পারি।

সাধারণে ১.৫ GHz এর বা ২ GHz বা তার থেকে বেশি GHz এর প্রসেসর ভালো কাজ করে।

তাই মোবাইল কেনার সময় তাতে থাকা প্রসেসরের GHz speed এর ধ্যান রাখবেন।

কোন মোবাইল প্রসেসর ভালো ? (Best and fast mobile processor)

এখন কথা হলো, মোবাইলে অনেক রকমের processor লাগানো থাকতে পারে।

এদের মধ্যে কোনটি ভালো বা কোনটি ভালো কাজ করবে সেটা কিভাবে জানবো।

তাহলে এর জবাব আমি আপনাদের দিবো।

আমি আগেই বলেছি যে মোবাইল কেনার সময় সবসময় প্রসেসরের কোর কত সেটা দেখবেন।

একটি কোয়াড কোর, হেক্সা কোর বা অক্টা কোর প্রসেসর অবশই ভালো কাজ করে।

কারণ এগুলোতে কোরের সংখ্যা বেশি এবং তাই এরা ৪ গুন্, ছয় গুন্ এবং আট গুন্ শক্তি দিয়ে কাজ করতে পারে।

কিন্তু একটি ভালো processor ১০০% কেবল কোরের ওপরেই নির্ভর করেনা।

আরো অনেক কিছু আছে যেগুলো দেখে আপনি অবশই একটি ভালো প্রসেসর সহ মোবাইল কিনে নিতে পারবেন।

সেগুলো হলো –

Processor architecture (গঠন)

প্রসেসরের আর্কিটেকচার বা গঠন বা ডিসাইন দেখাটা অনেক জরুরি।

যেমন, সব ধরণের electronic জিনিস সময়ে সময়ে উন্নত হতে থাকে ঠিক তেমন mobile processor গুলিও উন্নত হতে থাকে।

সেগুলির আকার আকৃতি গঠন এবং কাজ করার ক্ষমতা সব কিছু সময়ে সময়ে উন্নত এবং ভালো হতে থাকে।

তাই, অবশই মনে রাখবেন, যখনই মোবাইল কিনতে যাবেন বা কোনো মোবাইল কিনবে বোলে ভাববেন তখন তাতে থাকা প্রসেসর latest architecture দ্বারা সম্পন্ন আছে কি না ধ্যান রাখবেন।

Processor যে latest architecture এর সেটা আপনি অনেক সহজে বুঝতে পারবেন।

তার জন্য আপনার প্রসেসরের cortex নাম্বার দেখতে হবে।

মোবাইলের প্যাকেটের পেছনে specification লিস্টে বা ইন্টারনেটে সার্চ করে মোবাইলের প্রসেসরের cortex নম্বরটি দেখুন।

যদি প্রসেসরে ARM cortex A53 বা ARM cortex A57 লেখা থাকে তাহলে সেই প্রসেসর লেটেস্ট এবং উন্নত।

ARM cortex এর সংখ্যা যতটা বেশি হবে প্রসেসর architecture ততটাই latest বা উন্নত হবে।

প্রসেসরের প্রযুক্তি (Technology)

আজকাল প্রসেসরের technology বা প্রযুক্তি অনেকটাই উন্নত হয়েগেছে। আজকাল প্রসেসরে অনেক ছোট ছোট nano transistor লাগানো থাকে।

আজকাল যতটাই ছোট প্রসেসরের এই ট্রান্সিস্টার হয়েগেছে ততটাই ভালো এদের কাজ এবং ততটাই ফাস্ট এরা।

ট্রান্সিস্টার হলো প্রসেসরের মধ্যে লেগে থাকা ছোট ছোট micro chip (মাইক্রো চিপ). এই মাইক্রো চিপ গুলি যত ছোট হয় টোটো ফাস্ট আপনার মোবাইল কাজ করে, হ্যাং হয়না, এক সাথে সহজে অনেক কাজ করা যায়, high graphic গেম খেলতে পারবেন এবং মোবাইল কম ব্যাটারী খেয়ে অনেক কাজ করেনিতে পারে।

কারণ, ছোট transistor (ট্রান্সিস্টর) মানে latest technology এবং উন্নত প্রসেসর। তাই, এদের আজকালের দামি এবং ভালো smartphone এ অনেক ব্যবহার করা হয়।

মনে রাখবেন, এখন Samsung/exynos কোম্পানি সবথেকে ছোট ট্রান্সিস্টর থাকা প্রসেসর বানায় জেতাতে ১৪ nano miters এর micro chip থাকে।

তারপর, qualcomm বানায় ২০ ন্যানো মিটার এর মাইক্রো চিপের প্রসেসর।

শেষে, MediaTek বানায় ২৬ এবং ২৮ ন্যানো মাইটার এর মাইক্রো চিপ থাকা প্রসেসর।

তাই বলতেগেলে Samsung/exynos কোম্পানি সবথেকে ভালো প্রযুক্তির (technology) মোবাইল প্রসেসর বানায় এবং তারপর qualcomm কোম্পানি।

তাই আপনি মোবাইলে থাকা প্রসেসরের কোম্পানি দেখেনেয়াটা অনেক জরুরি যদি আপনি একটি ভালো প্রসেসর চান।

Processor frequency (ফ্রিকোয়েন্সি)

এবেপারে আমি আপনাকে ওপরে আগেই বলেছি। আপনার মোবাইল থাকা প্রসেসরের GHz বা frequency অবশই ১.৫ থেকে ২ GHz বা তার থেকে বেশি থাকাটা অনেক লাভজনক।

এতে আপনার মোবাইল দ্রুত গতিতে কাজ করবে এবং আপনার মোবাইল ব্যবহার করে ভালো লাগবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *