মন্ত্রীদের আত্মীয়দের জন্য চাই বিশেষ রেল, বিশেষ আইন ও পরিচয়পত্র

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি কৌতুক ছিল। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ভানু, আদালত বারবার বাবার নাম জানতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু ভানুর বাবা তো মারা গেছেন। হঠাৎ দেখলেন দূরে দাঁড়িয়ে আছে নিজেরই ভগ্নিপতি। ভানু তাকে দেখিয়ে দিলেন বাবা হিসেবে। ভানু খালাস। পরে ভগ্নিপতি জানতে চাইলেন, আদালতে সে কেন তাকে বাবা বলল। তখন ভানু বলেছিলেন, ‘কামের সময় যদি বাপের কামই না করতে পারো তাইলে এত টাকাপয়সা খরচ কইরা বোন বিয়া দিছি কিয়ের লাইগা?

https://10ms.io/SwFLdV
বিজ্ঞাপন

অনেক দিন পরে কৌতুকটা মনে পড়ল একটা খবর পড়ে। আর সেটা হলো বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ করায় টিটিই জরিমানা করেছিলেন রেলমন্ত্রীর তিন আত্মীয়কে। পরিণতিতে রেলের সেই টিটিই বরখাস্ত হয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় এখন জবাব দিতে হচ্ছে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামকে। তবে রেলমন্ত্রী এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ওই তিনজন তাঁর কোন কুলের আত্মীয়। তবে জানা যাচ্ছে তারা শ্বশুরকুলের আত্মীয়। যদি তা–ই হয়, তাহলে টিকিট পরিদর্শকের (টিটিই) বরখাস্ত না হয়ে উপায় কি। আর ঠিক এ কারণেই মনে পড়ে যায় ভানুর ওই কৌতুকটা।

https://10ms.io/cwDayy
বিজ্ঞাপন

একটা তদন্ত কমিটি অবশ্য গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কী করে, সেটা অবশ্য কমবেশি সবারই জানা। এখন কী কী হবে, সেটা বরং অনুমান করি। প্রথমত, প্রমাণ করা হবে আসল দোষ সেই টিটিইরই। তিনিই খারাপ ব্যবহার করেছিলেন, নয়তো বাড়তি টাকা চেয়েছিলেন, অথবা অন্য কিছু। সুতরাং আপাতত টিটিইর মুক্তি নেই।

মন্ত্রী বা নেতাদের আত্মীয় কাহিনি অবশ্য নতুন কিছু নয়। এই তো ঈদের আগে, ৫ মে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা হেলেনের স্বজনেরা পটুয়াখালীর পায়রা সেতুর টোল না দিয়েই গাড়ির বহর নিয়ে সেতু পার হতে চেয়েছিলেন। পরিণতিতে মারধর, ১০ জন আহত। আরও কিছুদিন আগে শিক্ষামন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভূমি অধিগ্রহণ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল। বেরসিক জেলা প্রশাসন তদন্ত করলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এরও আগে হাজি মো. সেলিমের পুত্রের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই দাঁড় করাতে পারেনি। এভাবে তালিকা করতে থাকলে এই লেখা আর শেষ হবে না।

https://10ms.io/fwDoXh
বিজ্ঞাপন

এসব ঘটনা কিন্তু সরকারের ভাবমূর্তির জন্য খুবই খারাপ। আমরা যারা আইনের শাসন আছে বলে চিৎকার-চেঁচামেচি করি, তাদের জন্য অনেক বড় হুমকি। সুতরাং অবশ্যই এর সমাধান দরকার। এ জন্য কিছু ব্যবস্থা নিলেই হয়। আমার প্রস্তাব অবশ্য পাঁচটি। এই পাঁচ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আত্মীয় কাহিনির অবসান ঘটবে, আইনের শাসনে লাগবে না সামান্যতম আঁচড়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *