ভারতে এবার চালের উৎপাদন কমবে, খাদ্যাভাবের শঙ্কা নাকচ

চাল
চাল

চলতি খরিপ মৌসুমে ভারতে চালের উৎপাদন ৬০ থেকে ৭০ লাখ টন কমবে। বিভিন্ন রাজ্যে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় এবার ধান রোপণ কম হয়েছে। গত খরিপ মৌসুমে যেখানে গোটা ভারতে ৪০৩ দশমিক ৫৮ লাখ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছিল, সেখানে এবার এখন পর্যন্ত হয়েছে ৩২৫ দশমিক ৩৯ লাখ হেক্টরে। ভারতের খাদ্য মন্ত্রণালয় এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। তবে উৎপাদন কমলেও তাতে দেশে খাদ্যাভাব দেখা দেবে না বলে দাবি সরকারের।

ভারতের খাদ্যসচিব সুধাংশু পান্ডে গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দিয়ে বলেন, এ বছর গোটা দেশে সমানভাবে বর্ষা হয়নি। কোনো কোনো রাজ্যে ভালো বৃষ্টি হলেও তা ছিল পরিমাণে কম। তবে যেসব রাজ্যে ভালো বৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোতে ধানের উৎপাদন আশানুরূপ হলে চালের ঘাটতি কমে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টন হতে পারে। আপাতত যা মনে হচ্ছে, তাতে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টন উৎপাদন কম হবে।

এ আশঙ্কার দরুন ভারত সরকার সম্প্রতি বাসমতি ছাড়া অন্য চাল রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছে। তা ছাড়া খুদ রপ্তানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে। তাতে অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা যাবে বলে ধারণা কেন্দ্রীয় সরকারের।

খাদ্য, গণবণ্টন ও উপভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, বৈশ্বিক কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে খুদের চাহিদা খুব বেড়েছে। সে জন্য এটির রপ্তানি বেড়ে যায়। এর ফলে দেশে খুদসহ চালের দামও বাড়ছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ খোলাবাজারে খুদের কেজি ১৬ রুপি থেকে বেড়ে ইতিমধ্যে ২২ রুপিতে উঠেছে। এতে পোলট্রিজাত পণ্যেরও মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, গত চার বছরে খুদ রপ্তানি বেড়েছে ৪৩ গুণ। খুদ প্রধানত পশুখাদ্য। বিশেষ করে মুরগির খাবার। তা ছাড়া ইথানল উৎপাদনেও খুদ ব্যবহৃত হয়।

ঘরোয়া বাজারে দাম যাতে না বাড়ে, সে জন্য ভারত সরকার এ বছর বেশ কিছু খাদ্যশস্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। গত মার্চ মাসে তীব্র দাবদাহের দরুন উৎপাদন কম হওয়ায় মে মাসে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়। তাতে আন্তর্জাতিক বাজারে ময়দার চাহিদা বেড়েছে। গত এপ্রিল থেকে জুলাইয়ে ময়দা রপ্তানি ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে আগস্ট মাস থেকে ময়দা রপ্তানিও বন্ধ করা হয়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

বর্ষাকালে যেসব ফসল বপন করা হয়, সেগুলোকে বলা হয় খরিপ ফসল। এসব ফসল ফলনের সময় (জুন/জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত) খরিপ মৌসুম হিসেবে পরিচিত। ভারত উপমহাদেশে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে খরিপ ফসলের চাষ হয়। ফসলগুলোর মধ্যে রয়েছে ধান, পাট, ভুট্টা, তুলা, ইক্ষু, রবার ইত্যাদি। খরিপ মৌসুমের এসব অর্থকরী ফসল কৃষকের অধিক অর্থ উপার্জনে বেশ সহায়ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *