বেশি দামে রাশিয়ার গম কেনার সমঝোতায় দুই ভাইয়ের ভূমিকা কী

রাশিয়াসহ বিশ্বের চারটি দেশে চলতি মৌসুমে গমের রেকর্ড পরিমাণ বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যটির দাম দ্রুত কমছে।
সবচেয়ে বেশি কমেছে রাশিয়ার গমের দাম। এক মাসে দেশটির গমের রপ্তানি মূল্য প্রতি টনে ৩৬ ডলার কমে ৩১৩ ডলারে নেমে এসেছে। বিশ্বের দানাদার খাদ্যপণ্যের বাজার ও দাম পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে এই পড়তি দামের মধ্যেই বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছ থেকে প্রতি টন গম ৪৩০ ডলারে কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বেশি দামে বাংলাদেশ সরকারের কাছে রাশিয়ার গম বিক্রির সমঝোতায় একটি কোম্পানির দুই ভাই ভূমিকা রেখেছেন বলে জানা গেছে।
রাশিয়ার কাছ থেকে বেশি দামে গম কেনা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। তবে খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সবদিক বিবেচনায় তারা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কৃষিবিষয়ক দপ্তর (ইউএসডিএ) থেকে প্রকাশ করা প্রতিবেদনটি বলছে, সামনের দিনগুলোয় বিশ্বে গমের দাম আরও কমতে পারে। কারণ, এই মৌসুমে রাশিয়া ছাড়াও ইউক্রেন, মেক্সিকো ও মরক্কোতে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে রাশিয়ার গমের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে।
সমঝোতায় দুই ভাই
রাশিয়ার কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার পাঁচ লাখ টন গম কিনছে। সরকারি পর্যায়ে চুক্তির ভিত্তিতে (জিটুজি) এই গম কেনা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার গমের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ইউনাইটেড গ্রেইন কোম্পানি (ওজেডকে)। তবে বাংলাদেশ সরকার গম আমদানির জন্য চুক্তি করেছে রাশিয়ার আরেক খাদ্যপণ্য রপ্তানিকারক রাষ্ট্রীয় কোম্পানি প্রডিনটর্গের সঙ্গে।
১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রডিনটর্গ এখন স্বল্প জনবল দিয়ে পরিচালিত হয়। প্রডিনটর্গের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছে ন্যাশনাল ইলেকট্রিক বিডি লিমিটেড।
ন্যাশনাল ইলেকট্রিক মূলত জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাত নিয়ে কাজ করে। তারা রাশিয়ার সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি কোম্পানির বাংলাদেশ প্রতিনিধি। কোম্পানিটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছে।
২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল ইলেকট্রিক রাশিয়া ছাড়াও চীন, ইউক্রেন, দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন কোম্পানির আন্তর্জাতিক অংশীদার।
কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মিঞা সাত্তার। তিনি রাশিয়ায় থাকেন। তাঁর ভাই মো. আমিরুজ্জামান কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
রাশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বাংলাদেশে বিক্রির ক্ষেত্রে এই দুই ভাই সমঝোতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশ সরকারের কাছে রাশিয়ার গম টনপ্রতি ৪৩০ ডলারে বিক্রির সমঝোতায় এই দুই ভাই একটা ভূমিকা রেখেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।