বিনিয়োগকারীর মুনাফায় হাত
সুদ ব্যয় বেশি হয়ে যাচ্ছে—এমন যুক্তি দিয়ে গতকাল সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের মুনাফা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
- ২০১৫ সালের ২৩ মের পর গতকাল নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হলো।
- ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাব, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের মুনাফার হার কমানো হয়নি।
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর নির্ভর করে যাঁরা সংসার চালান, তাঁদের জন্য দুঃসংবাদই এটি। পাঁচটি সঞ্চয় কর্মসূচি ও একটি বন্ডে মুনাফার হার কমিয়ে দিয়েছে সরকার। প্রথমবারের মতো সরকার মুনাফার হারের আলাদা স্তরও করেছে। সঞ্চয় কর্মসূচির স্তর করেছে তিনটি, আর বন্ডের চারটি। সে অনুযায়ী কম টাকা বিনিয়োগকারীর মুনাফার হার বেশি, আর বেশি টাকা বিনিয়োগকারীর মুনাফার হার কম।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) গতকাল মঙ্গলবার এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মুনাফার হার নিয়ে আগের প্রজ্ঞাপনটি জারি হয়েছিল ছয় বছর আগে অর্থাৎ ২০১৫ সালের ২৩ মে। নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যাঁরা নতুন করে সঞ্চয়পত্র কিনবেন, শুধু তাঁদের জন্য পরিবর্তিত হার কার্যকর হবে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক রকম হার, ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক রকম হার এবং ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরেক রকম হার করা হয়েছে। তবে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হারে সরকার হাত দেয়নি।
যে ছয় সঞ্চয় কর্মসূচির জন্য নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তার মধ্যে চারটি হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। এগুলো হচ্ছে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র এবং পরিবার সঞ্চয়পত্র। এগুলোর মুনাফার হার কমানো হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-সাধারণ হিসাব ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক মেয়াদি হিসাব। এ দুটি হচ্ছে সঞ্চয় কর্মসূচি। সাধারণ হিসাবের সুদের হার আগেরটাই আছে। তবে মেয়াদি হিসাবেরটি কমানো হয়েছে।
আগের কেনা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কেউ পুনর্বিনিয়োগ করলে তখন তার নতুন বিনিয়োগের অংশটুকুর ক্ষেত্রে নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। শুধু ব্যক্তি নয়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্যও প্রযোজ্য হবে নতুন এ মুনাফার হার। গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার আগপর্যন্ত যাঁদের যে বিনিয়োগ আছে, তাঁরা আগের হারেই মুনাফা পেয়ে যাবেন।