বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন

একটি গণতান্ত্রিক দেশে জনগণের যেকোনো ধরনের সমস্যায় সরকারের প্রত্যক্ষ ভূমিকা অতিপ্রয়োজনীয়। এতে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। পাশাপাশি সরকার যে প্রজাতন্ত্রের কল্যাণেই গঠিত হয়েছে, সে কথাও প্রমাণিত হয়। কোনো উৎসব আয়োজন কিংবা সাধারণ সময়েও অবৈধ সিন্ডিকেটসমূহের কারণে সময়ে অসময়ে অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থার গল্প আজ নতুন নয়। আসছে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের দাম কী পরিমাণ আকাশছোঁয়া পরিস্থিতিকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে, তা মোটামুটি চলমান বাজার পরিস্থিতির দিকে একটু নজর দিলে সহজেই বোঝা যাবে।

বিগত সময়গুলোতেও পবিত্র রমজান মাসে সরকার চেষ্টা করেও কোনোভাবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেশ কার্যক্রম চোখে পড়লেও বাজারের অনিয়ন্ত্রিত অবস্থার জন্য প্রকৃতপক্ষে দায়ী ব্যক্তিরা অথবা সম্পূর্ণ সিন্ডিকেট ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। এসব সমস্যার সমাধানে ক্ষুদ্র বা মাঝারি ব্যবসায়ীদের শাস্তি দিয়ে পুরোপুরি সমাধান সম্ভব নয়।

আইনের আওতায় আনতে হবে রাঘববোয়ালদের, যারা আড়াল থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণের অপচেষ্টা করে ভোক্তার অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে চলেছে। পুরোপুরিভাবে এসব সিন্ডিকেট নির্মূল করতে না পারায় প্রতিবছর এদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। একটি জাতীয় দৈনিকে জনৈক এক ভদ্রলোক লিখেছেন, সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ। কথা তিনি ভুল বলেননি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভোক্তাদের কথা চিন্তা করে রমজান মাসে ভোগ্যপণ্য কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সহনশীল মাত্রার চেয়েও কিছুটা কমিয়ে আনা হয়। বাংলাদেশের বাজারেই সম্ভবত এ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা ঘটে। ভোক্তাদের একটি অংশ অবশ্য এর প্রতিবাদস্বরূপ মিডিয়ার সামনে কিছুটা আক্ষেপ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেও বাকিরা উপায়ান্তর না দেখে এই অবস্থাকে চুপচাপ মেনে নিয়েছেন বলেই মনে হয়। অবশ্য আক্ষেপ প্রকাশে যদিও লাভের লাভ কিছুই হয় না। দিনশেষে বলির পাঁঠা হতে হয় মধ্যবিত্ত জনগণকেই। আর নিম্নবিত্তদের সেই অপরিবর্তিত হাহাকার অবস্থা, মৃত্যুর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে টিকে থাকা। মাথাপিছু আয় বাড়ছে ঠিকই, তবে এই শ্রেণির মানুষ আজীবনই বঞ্চিত।

ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে সীমিত আয়ের মানুষ। যাঁদের এক লিটার, পাঁচ লিটারের তেলের বোতল কেনার সামর্থ্য নেই, তাঁরা অল্প পরিমাণে খোলা তেল কিনে কাজ চালিয়ে নেন। তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়ায়
ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে সীমিত আয়ের মানুষ। যাঁদের এক লিটার, পাঁচ লিটারের তেলের বোতল কেনার সামর্থ্য নেই, তাঁরা অল্প পরিমাণে খোলা তেল কিনে কাজ চালিয়ে নেন। তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়ায় 

তাদের জন্য সরকারের অনুদান বাজেট পাস হলেও, সেই অর্থ কিংবা সহযোগিতা কোনো এক অদ্ভুত কারণে তা নিম্নবিত্তের দরজা পর্যন্ত পৌঁছায় না। পুঁজিবাদ সমাজের মতো বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ প্রকৃতপক্ষেই একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *