পরিবেশবান্ধব জ্বালানির জন্য ‘কৃত্রিম সূর্য’ আবিষ্কার
দক্ষিণ কোরিয়ার পদার্থবিদেরা পরিবেশবান্ধব বা নিরাপদ পারমাণবিক শক্তির একটি কৃত্রিম উৎস আবিষ্কার করেছেন। শক্তিশালী পারমাণবিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে এটা করা হয়েছে, যা সূর্যের চেয়ে সাত গুণ বেশি তাপ উৎপন্ন করতে সক্ষম। বিশ্বজুড়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির তীব্র সংকটের মুখে তাঁদের এ আবিষ্কারকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এটাকে অনেকে ‘কৃত্রিম সূর্য’ আবিষ্কার হিসেবেই দেখছেন। খবর নিউইয়র্ক পোস্ট–এর।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও কোরিয়া ইনস্টিটিউট অব ফিউশন এনার্জির বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, কোরিয়া সুপারকন্ডাক্টিং তোকামাক অ্যাডভান্সড রিসার্চ (কেএসটিএআর) নামে একটি পারমাণবিক চুল্লি (রিঅ্যাক্টর) ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় পৌঁছায়। এটা মাইলফলক, যা প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটেছে।
কেএসটিএআর পারমাণবিক চুল্লি উত্তপ্ত হয়ে অত্যধিক তাপমাত্রা সৃষ্টির ঘটনার একটি ভিডিও গত শুক্রবার ইউটিউবে শেয়ার করা হয়। ‘সায়েন্স অ্যালার্ট’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে এটি আপলোড করা হয়েছে।
ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, কেএসটিএআর চুল্লিটি ২৪ সেকেন্ডের মধ্যে এই আয়ন তাপমাত্রা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। চ্যানেলের তথ্যে আরও বলা হয়েছে, কোরিয়ার কেএসটিএআর চুল্লিটি ২০ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্লাজমা ধরে রেখেছে। প্লাজমা হলো অতি উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস। গবেষকেরা শব্দের মধ্য দিয়ে এ প্লাজমাকে শনাক্ত করতে পারেন।
নিউইয়র্ক পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, আসল সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রা দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার মাধ্যমে তাপ উৎপাদনের মতোই তাপমাত্রা পেতে এর প্রক্রিয়াকে কৃত্রিমভাবে প্রয়োগের চেষ্টা করছেন। এ বছরের শেষ নাগাদ ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ৫০ সেকেন্ড ধরে রাখতে চান বিজ্ঞানীরা। ২০২৬ সাল নাগাদ তাঁদের লক্ষ্য হচ্ছে কৃত্রিম সূর্যের তাপমাত্রা ৩০০ সেকেন্ড বা ৫ মিনিট পর্যন্ত ধরে রাখা। ধীরে ধীরে তা বাড়ানো, যাতে করে পরিবেশবান্ধব শক্তি পাওয়া যেতে পারে। এতে করে জ্বালানিসংকটও দূর করা সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণায় জানিয়েছেন।