‘তেলের বোতলে বডি রেট কী আছে আপনাদের দেখার দরকার নাই, নতুন দামে কেনেন’
খুলনা শহরের পাড়ার মুদি দোকান ও ছোট বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল না পাওয়া গেলেও নগরের বড়বাজার মোকামের বিভিন্ন দোকানে ঝুলানো আছে তেলের বোতল। ছবিটি আজ শনিবার দুপুরে তোলাছবি: উত্তম মণ্ডল
মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার পরও খুলনার বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট আগের মতোই আছে। পাড়ার মুদিদোকানে ও ছোট বাজারে বেশি দাম দিয়েও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। তবে প্রায় সব দোকানেই খোলা সয়াবিন তেল তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা মনে করছেন, ভোজ্যতেলের বাজার স্বাভাবিক হতে আরও কয়েক দিন লাগতে পারে।
শনিবার খুলনা নগরের পাঁচটি এলাকায় ১৫টি মুদিদোকান ঘুরে দেখা গেছে, কোনো দোকানেই বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। এর মধ্যে ১০টি দোকানে খোলা সয়াবিন তেল ২১০ থেকে ২২০ টাকায় প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে। দোকানিরা বলছেন, কোম্পানির পরিবেশকেরা তেল সরবরাহ করছেন না। এমনকি ফোনও ধরছেন না।
তবে খুলনা অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পাইকারি মোকাম খুলনা বড়বাজারে বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে। ওই মোকামে পাওয়া বোতলজাত সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ের মূল্য যা–ই থাকুক না কেন, সরকারনির্ধারিত বর্তমান দামে এবং কিছু দোকানে তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সেখানে খোলা সয়াবিন তেল খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা লিটার।
নগরের ময়লাপোতা মোড়ের ফ্যালকন ট্রেডার্সের বিক্রয়কর্মী মৃত্যঞ্জয় মণ্ডল জানান, পুরো রমজানে দোকানে তেলের সরবরাহ নেই। তাঁরা সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন না।
শেরেবাংলা রোডের তানজিল গাজী স্টোরের মালিক আকরাম হোসেন বলেন, ঈদের আগে ২০ লিটারের মতো খোলা সয়াবিন তেল ১৯৬ টাকা লিটার দরে কিনেছিলেন তিনি। সেখান থেকেই বাঁধা খরিদ্দারদের কাছে একটু–আধটু তেল বিক্রি করছেন। পরিবেশকেরা যোগাযোগ তো করছেনই না, ফোন দিলেও ধরছেন না।
বকশিপাড়া এলাকার পপুলার স্টোরের মালিক মনসুর আলী বলেন, ‘বোতলের তেল তো নেই। বেশি দামে অল্প করে খোলা তেল কিনছি। এখন তেল আছে তিন-চার লিটার। ২২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। মানুষ কিনতে এসে নানা প্রশ্ন করছেন। তেল বিক্রি করা এখন যেন পাপ কাজ।’
ইকবাল নগর এলাকার বাসিন্দা মো. আসলাম সয়াবিন তেল কিনতে আসেন ফারাজিপাড়া এলাকায়। বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে কোথাও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাননি তিনি। শেষমেশ ওই এলাকার মালেক স্টোর থেকে খোলা সয়াবিন তেল কেনেন। তিনি বলেন, কোথাও বোতলজাত তেল নেই। আর খোলা তেলের দামও অনেক বেশি। বাধ্য হয়ে আপাতত অল্প করে খোলা সয়াবিন কিনতে হচ্ছে।