জেরবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেশনজটে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানালেন, তিনি ২০১৮ সালের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার্থী। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। ছয়টি বিষয়ের মধ্যে চারটি হওয়ার পর করোনা সংক্রমণের কারণে পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। দুটি পরীক্ষা শেষ হলেই তাঁর স্নাতকোত্তর শেষ হয়ে যেত। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে প্রায় এক বছর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্নাতকোত্তরের বাকি পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সময়সূচি ঘোষণা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, কিন্তু সেটিও স্থগিত করতে হয় করোনার কারণে। এখন আবার আগামী মাসে বাকি পরীক্ষাগুলো নেওয়ার জন্য নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
শুধু স্নাতকোত্তর স্তরের শিক্ষার্থী নয়, করোনার অভিঘাতে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে পড়ুয়া প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী কমবেশি সেশনজটে পড়ে জেরবার অবস্থায় আছেন। শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে যেমন পিছিয়ে পড়ছেন, তেমনি বেশি দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকার কারণে আর্থিকভাবেও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ফলে তাঁদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হতাশা।
এক বছর সেশনজট মাথায় নিয়ে শুরু
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাই নেওয়া যায়নি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এ বছরের ৩০ জানুয়ারি এসএসসি ও জেএসসির পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। এতে ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়য়ে আসন কম থাকায় কলেজগুলোতে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভর্তির প্রক্রিয়াটি চলছে। পরীক্ষা ছাড়াই এসএসসি ও এইচএসসির ফলের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার ভর্তির ফল প্রকাশ করা হবে। ভর্তি শেষ করে অনলাইনে ক্লাস শুরু হবে। কিন্তু তাতেও এই শিক্ষাবর্ষের জন্য এক বছরের বেশি সময় চলে গেছে। অবশ্য এই সমস্যা কেবল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একার নয়।