ছেলের কণ্ঠে ছিল বাঁচার আকুতি, অসহায় মা শুধু তাকিয়ে দেখছিলেন
গ্রীষ্মের ছুটিতে দাদার বাড়ি যাওয়ার আবদার ধরেছিল আঁখি আক্তারের (৩০) দুই সন্তান। সন্তানদের বায়নামতো তাদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন মা আঁখি। কিন্তু পথে দুর্ঘটনায় চোখের সামনে ছেলে আরাফাতকে চলে যেতে দেখেন আঁখি। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত আঁখি চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেই কথা ভেবে হাসপাতালের বিছানায় বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
আজ রোববার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বামরাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। ওই দুর্ঘটনায় ছেলে আরাফাত (৯) নিহত হয়। গুরুতর আহত হন আঁখি আক্তার (৩০) ও মেয়ে মরিয়ম (৩)।
আরাফাতের ফুফু মুক্তা বেগম (৩০) বলেন, তাঁর বড় ভাই ঝালকাঠি সদরের বাসন্ডা ইউনিয়নের দারাখানা গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন ওমানপ্রবাসী। ভাবি আঁখি ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার বায়না করেছিল ছেলেমেয়ে। এ জন্য তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে গতকাল শনিবার রাতে যমুনা পরিবহনের একটি গাড়িতে রওনা দেন।
মুক্তা বেগম আরও বলেন, আজ উজিরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ভাতিজা আরাফাত নিহত হয়। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত আঁখি ও মরিয়ম উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
বিলাপ করতে করতে আঁখি বলছিলেন, ‘মোর বাজানের মৃত্যু ও বাঁচার আকুতি চোখের সামনে দেখতে হলো। অথচ আমার কিছুই করার ছিল না। মেয়ে মরিয়মকে নিয়ে নিজেও আটকা ছিলাম।’ ছেলে চাপা পড়ার হৃদয়বিদারক দৃশ্যের কথা বলতে গিয়েই মূর্ছা যান আঁখি।
মুক্তা বেগম বলেন, আরাফাতের লাশ বাড়িতে আনার পর স্বজনদের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।