গরুর দাম কমবে, আশায় ক্রেতারা
বেশি দাম পাবেন—এমন আশায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ২২টি গরু নিয়ে রাজধানীর উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টরে কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাটে এসেছেন ব্যাপারী শাকিবুল কবির। তিনি প্রতিটি গরুর যে দাম চাইছেন, তা শোনার পর ক্রেতারা আর খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। গত দুই দিনে তিনি মাত্র দুটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তরার পশুর হাটে কথা হয় শাকিবুলের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখনো হাটে সেভাবে ক্রেতা আসছেন না। যাঁরা আসছেন, তাঁরা দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন। শুক্রবার (আজ) থেকে পুরোদমে বেচাবিক্রি শুরু হবে বলে আশা তাঁর।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত বুধবার রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটে কেনাবেচা শুরু হয়েছে। তবে বাজার এখনো জমে ওঠেনি। এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৯টি অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে। এর বাইরে দুটি স্থায়ী পশুর হাটেও কেনাবেচা শুরু হয়েছে।
উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের পশুর হাটের মতো রাজধানীর অন্য হাটগুলোতেও ক্রেতার উপস্থিতি কম।
সবার একই কথা, ব্যাপারীরা দাম বেশি চাইছেন এবার। একই আকৃতির গরুর ক্ষেত্রে গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দাম চাওয়া হচ্ছে। তাই কত দাম বলবেন, সেটি বুঝে উঠতে পারছেন না। এই ক্রেতাদের আশা, ঈদের আগের দিন দাম কিছুটা কমতে পারে।
উত্তরার হাটে দুই ছেলেকে নিয়ে গরু কিনতে এসেছেন মানিকদি এলাকার বাসিন্দা ইসরাফিল মিয়া। প্রায় দেড় ঘণ্টা দরদাম করেও গরু কিনতে পারেননি। এই সময়ের মধ্যে তিনি দুটি গরু পছন্দ করেছেন। একেকটির ওজন প্রায় ১০ মণ। ওই দুটি গরুর জন্য ছয় লাখ টাকা দাম বলেছেন। কিন্তু ব্যাপারী ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার কমে বিক্রি করবেন না।
উত্তরার হাটে প্রায় ৩৫ মণ ওজনের একটি গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ১২ লাখ টাকা। এই গরুর দাম গত বুধবার চাওয়া হয়েছিল ১৪ লাখ টাকা।
হাটে আসা ক্রেতারা বলছেন, গত কোরবানির ঈদের আগের দিন হাটে প্রচুর গরু ছিল, কিন্তু ক্রেতা তেমন ছিল না। ফলে গরুর দাম কমে যায়। এবারও শেষ সময়ে এসে গরুর দাম কমে যেতে পারে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, এবার গরুর কেজি ৭০০ টাকা ধরে দাম চাইছেন তাঁরা। এর কারণ, গরুর খাবারসহ লালন–পালনের খরচ গতবারের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে।
গতকাল বেলা তিনটার দিকে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের অস্থায়ী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। হাট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা বলেছেন, তিন দিন আগে গরু কিনে রাখার মতো জায়গা অনেকেরই নেই। ফলে বিক্রি হবে মূলত শেষ দুই দিন—শুক্র ও শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত।