কোম্পানি নিবন্ধনে ভাটা পড়েছে

হঠাৎ কোম্পানি নিবন্ধনে ধস নেমেছে। কোম্পানি গঠনে উদ্যোক্তাদের যেন আগ্রহ একেবারে তলানিতে নেমে গেছে। অথচ এক বছর আগেও বিপরীত চিত্র ছিল। তখন যেন কোম্পানি গঠনের হিড়িক পড়েছিল। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) দৈনিক গড়ে ৭টির মতো কোম্পানি নিবন্ধন করেছে। আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে দৈনিক ৩৩টি কোম্পানির নিবন্ধন নিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা, যা এখনকার চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।
যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সব মিলিয়ে মাত্র ১ হাজার ৩৬৫টি কোম্পানির নিবন্ধন হয়েছে। তবে কোম্পানি নিবন্ধন করার মানেই কিন্তু তা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনা নয়। কারণ, অনেক উদ্যোক্তা বা শিল্পগোষ্ঠী সহযোগী কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন নিলেও তাৎক্ষণিকভাবে পরিচালনায় যায় না কিংবা দেরিতে যায় বলে জানা গেছে।
করোনার কারণে আগের দুই বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যে চাঙাভাব নেই। তা সত্ত্বেও অনেক উদ্যোক্তা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কোম্পানি খুলে রাখেন। অর্থাৎ ওই সময়ে যেন কোম্পানি গঠনের হিড়িক পড়েছিল। কাগজপত্রের ঝামেলা এড়াতে পরামর্শক বা আইনি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নামে অনেকে কোম্পানি গঠন করেন। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যবসা করার জন্য ১২ হাজার ১২৫টি কোম্পানির নিবন্ধন নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ছুটির দিন বিবেচনায় নিলেও প্রতিদিন গড়ে ৩৩টির বেশি কোম্পানি নিবন্ধন দিয়েছে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর।কোম্পানি গঠনে নিবন্ধন নেওয়াসহ যাবতীয় কাজ করার জন্য পরামর্শক হিসেবে কাজ করে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আরজেএসসির প্রধান কার্যালয়ের আশপাশের ভবনগুলোয় এমন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তেমনই একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হলো সাইফুল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। এই প্রতিষ্ঠানের সেবাগ্রহীতার সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মো. রিপন মিয়া। তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেকেই এখন বিনিয়োগে আসতে আগ্রহী হচ্ছেন না। এই সময়ে ঝুঁকিতে পড়তে চান না কেউ। এ ছাড়া তরুণ উদ্যোক্তারা তুলনামূলক সচেতন হওয়ায় সব কাগজপত্র ঠিকঠাক করেই নিবন্ধনের আবেদন করছেন।