উৎসব ঘিরেই লেনদেন–জমার রেকর্ড
এখন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি শহরে বসবাসকারী নাগরিকেরাও মোবাইলে আর্থিক সেবার (এমএফএস) সুবিধা নিচ্ছেন। মানুষের মধ্যে ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি এই সেবা এখন শুধু টাকা পাঠানো ও গ্রহণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বিল পরিশোধ, কেনাকাটা, মোবাইল রিচার্জ, টাকা জমানো, ঋণ গ্রহণসহ নানা ধরনের লেনদেন করা যাচ্ছে। এর ফলে দিন দিন বাড়ছে এমএফএসের ব্যবহার।
তবে উৎসব-পার্বণে এসব সেবার ব্যবহার বেড়ে যায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। এতে এমএফএস লেনদেনের পাশাপাশি গ্রাহকের হিসাবে
উদ্বৃত্ত টাকায় নতুন রেকর্ড হচ্ছে। কারণ, উৎসব–পার্বণে অনেকের বেতন-বোনাস হয় এমএফএস হিসাবে। আবার বিদেশ থেকেও প্রবাসী আয় আসা বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলে এমএফএস সেবার আওতায় লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। আর ওই মাসে গ্রাহকের হিসাবে জমা ছিল ১২ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। দুটোই এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত এপ্রিল ছিল পবিত্র রমজান মাস ও মে মাসের প্রথম সপ্তাহে উদ্যাপিত হয় ঈদুল ফিতর।
বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ও ডাক বিভাগের সেবা নগদ মিলে দেশে এখন এমএফএস প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১৩টি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়, এমক্যাশ, মাইক্যাশ, ট্যাপ।
গত জুলাই শেষে এসব সেবায় নিবন্ধিত গ্রাহক ছিলেন ১৮ কোটি ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৬৩ জন। তবে সক্রিয় গ্রাহক ৮ কোটির কম। একজন নাগরিক সব ধরনের এমএফএসে হিসাব খুলতে পারেন, ফলে ঠিক কতজন নাগরিক এই সেবায় যুক্ত হয়েছেন, তা উল্লেখিত হিসাব থেকে নিশ্চিত করা বলা যায় না। তবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন এ সেবা পৌঁছে গেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, এখন সরকারি বিভিন্ন ভাতা, অনুদানও বিভিন্ন এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
গত জুলাইয়ে বিভিন্ন এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লেনদেন হয় ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। জুনে লেনদেন হয়েছিল ৯৪ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। গত এপ্রিলের পর জুনেই সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। কারণ, জুলাইয়ের শুরুতে ছিল কোরবানির ঈদ। আর এই কারণে জুনে লেনদেনও হয় বেশি।
বিকাশের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদ-পূজার মতো উৎসব এলেই কেনাকাটা বাড়ে।
এই সময় প্রবাসী আয় আসাও বেড়ে যায়। আবার বেতন ও বোনাসও যায় গ্রাহকের হিসাবে। এই সময়ে উৎসবের আনন্দ বাড়াতে আমরাও কেনাকাটায় নানা অফার দিয়ে থাকি। এ জন্য লেনদেনও বেড়ে যায়।’