উদ্ধারকারীই হলেন মানব পাচার মামলার আসামি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পাচারের হাত থেকে একজনকে উদ্ধার করেছিলেন সাতক্ষীরার এক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। পরে উল্টো ইউনিয়ন পরিষদের সেই সদস্যের বিরুদ্ধেই মানব পাচারের মামলা করা হয়। বাদী ছিলেন মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত চক্রের সদস্যরা। মানব পাচারকারীরা এতটাই প্রভাবশালী। পরে অবশ্য পুলিশ সদর দপ্তরের মনিটরিং সেলের হস্তক্ষেপে ওই জনপ্রতিনিধি মামলা থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।

আজ সোমবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সদর দপ্তরে মানব পাচার প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালায় এমন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন ‘সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ’–এর চেয়ারম্যান ইশরাত শামীম।

ইশরাত শামীম বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধারের পর অনেক সময় ঘটনার জন্য তাঁর ওপরই দোষ চাপিয়ে গালাগালি করা হয়। পুলিশ সদস্যদের বুঝতে হবে ওই নারী ইচ্ছা করে পাচারের শিকার হননি। তাই তাঁদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে। আমি পাচারের শিকার নারী, শিশুদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা কী ধরনের আচরণ করবে, তার ওপর বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ দিয়েছি।’

মানব পাচারে অধিকাংশ মামলার শাস্তি হয় না উল্লেখ করে কর্মশালায় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেন, মানব পাচার একটি আন্তদেশীয় অপরাধ। তাই বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করা যায় না। ফলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা আদালতে প্রয়োজনীয় নথি উপস্থাপন করতে না পারায় শাস্তি নিশ্চিত করা যায় না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, দেশ কিংবা বিদেশ থেকে পাচারের শিকার ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করার পর পাচারকারী চক্রের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা টাকার বিনিময়ে আপস করে ফেলেন। এসব কারণে মানব পাচারের মামলায় জড়িত অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে না।

মানব পাচার রোধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বক্তরা বলেন, মানব পাচার রোধে হটলাইন চালু করা, সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়ানো ও যেসব দেশে বেশি পাচারের ঘটনা ঘটে, ওই সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো, তথ্য আদান–প্রদানের ওপর জোর দিতে হবে। পাশাপাশি যেসব এলাকা থেকে মানুষ বেশি বিদেশ যান, ওই সব এলাকায় জনসচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি নিয়ে মানুষকে সচেতন করার প্রতি জোর দেন বক্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *