আমরা একটা নষ্ট সময় অতিক্রম করছি: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

‘আমরা একটা নষ্ট সময়, একটা ভয়ংকর সময় অতিক্রম করছি।’ দৈনিক নয়াদিগন্তের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে নয়াদিগন্তের কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে আমরা সরাসরি জড়িত ছিলাম। তখন কি যুদ্ধ করেছিলাম মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেব, তার ভোটের অধিকার কেড়ে নেব, তার কথা বলার অধিকার কেড়ে নেব, এ কারণে? এই যে সাংবাদিক ভাইয়েরা সবাই বসে আছেন, তাঁদের লেখার অধিকার কেড়ে নেব?’

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আবার স্বাধীনতার কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে তারা মানুষের অধিকারগুলো পুরোপুরিভাবে কেড়ে নিচ্ছে। এই সময়টা আমাদের অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে, অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে অতিক্রম করতে হবে এবং আমাদের জয়লাভ করতে হবে।’

বক্তব্যের শুরুতে বিএনপির মহাসচিব গতকালের বৃষ্টিপাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা, বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জলাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেন। এ জলাবদ্ধতা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের মেগা উন্নয়নের ফল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উত্তরার বাসা থেকে বের হেয় পথের ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে এখানে এসেছি। আপনারা জানেন, আজকে উত্তরার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। ডিএমপি কমিশনার একটা সার্কুলার দিয়েছেন এই সড়ক ব্যবহার না করার জন্য। গতকালের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে যে বৃষ্টি হয়েছে, তাতে এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত এই রাস্তা আর চলাচলের উপযোগী নয়। এই কথা আমি বেশ কিছু দিন ধরে বলে আসছি, এই রাস্তাটার কথা। এই যে মেগা প্রজেক্ট, মেগা উন্নয়ন—তার একটা ফল, সে জন্য আজকে এই অবস্থা।’

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে হওয়া ভারী বৃষ্টিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় আজ রাজধানীর খিলক্ষেত, উত্তরা-বিমানবন্দর এলাকায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। এ অবস্থায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া উত্তরা যাওয়ার পথ ব্যবহার না করার অনুরোধ জানায়।
‘সাংবিধানিক কমিশন করবে বিএনপি’

সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপদ্ধতি বাতিলসহ সংবিধানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীর সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘এ দেশের মানুষ যা চাইবে, সেটাই হচ্ছে সংবিধান। আমি মনে করি, বর্তমান যে সংবিধান আছে, তা মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, যদি জনগণের ম্যান্ডেটে বিজয় অর্জন করতে পারি, তাহলে সাংবিধানিক কমিশন তৈরি করে অগণতান্ত্রিক, জনগণবিরোধী বিষয়গুলো বাতিল করে সত্যিকার অর্থেই যুগোপযোগী একটা সংবিধান আমরা নিয়ে আসার চেষ্টা করব।’

বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তার, সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধের কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আপনারা অতীতে যে ভূমিকা রেখেছেন, তা অব্যাহত রাখবেন। আপনারা জনগণের পাশে দাঁড়াবেন, এই বিশ্বাস আমার আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *